
এক যুগ পর এবার চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমি জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী পালন করবে



” আমি চিরতরে দূরে চলে যাব ,
তবু আমারে দেব না ভুলিতে ”
প্রেম ও দ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলাম। যার গান, কবিতা, সাহিত্য যুগে যুগে বাঙালির জীবন সংগ্রাম ও স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রেরণার উৎস। বাংলা কবিতায় যিনি এনেছিলেন সম্পূর্ণ এক নতুন সুর। ছিলেন মানবতার প্রচারক, গানে মিশিয়েছিলেন বিচিত্র ধারা। তিনি দ্রোহে ও প্রেমে, কোমলে-কঠোরে বাংলা সাহিত্য ও সংগীতে দিয়েছেন নতুন মাত্রা। কবিতার ইতিহাসে তাঁর লেখা ‘বিদ্রোহী’ এক অনন্য ও অসাধারণ রচনা। মাত্র ২২ বছর বয়সে লেখা এ কবিতা এখনো প্রাসঙ্গিক এবং অব্যাহতভাবে প্রাসঙ্গিক থাকবে চিরকাল। মানবতার জয়গানে কবি নজরুলের ছিলো উচ্চকণ্ঠ। তাইতো তিনি লিখেছেন,
‘গাহি সাম্যের গান—
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান্…’।

১৯৭২ সালের ২৪ মে স্বাধীন বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে কবি নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। তাঁকে দেওয়া হয় জাতীয় কবির মর্যাদা।
১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র ঢাকায় পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) ৭৭ বছর বয়সে জাতীয় কবি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কবি নজরুল তাঁর কবিতায় লিখেছিলেন,
” মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই,/যেন গোরের থেyকে মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই। ”
সেই বিবেচনাতেই কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে সমাধিস্থ করা হয়।
আগামী ২৭ আগস্ট (১২ ভাদ্র) শনিবার ২০২২ খ্রিঃ জাতীয় কবির ৪৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী। এক যুগ পর চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমি জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী পালন করবে। মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করা হবে জাতীয় কবিকে। এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির আয়োজনে কবি নজরুলের বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি জাতীয় কবিকে নিবেদন করে কবিতা আবৃত্তি ও গান পরিবেশ করা হবে।
চাঁদপুর শহরের জোড়পকুর পাড়ে চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলার কবি, সাহিত্যিক ও সাহিত্য অনুরাগিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির সদস্য সচিব শাহাদাত হোসেন শান্ত।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির গঠনতন্ত্রের ৭ এর আর্দশ ও উদ্দেশ্য অনু্চ্ছেদের (ঙ) উপ – ধারায় উল্লেখ আছে – ” জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবস এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সাহিত্য ও ব্যক্তিত্বের জন্ম ও মৃত্যু দিবস পালন করা।
অথচ বিগত এক যুগ ধরে চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমিতে জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জন্মবার্ষিকী, শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এঁর জন্ম ও মৃত্যু দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস, ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে ‘বিজয় দিবস’ পালন করা হয়নি!
H/N

